টেলিগ্রাম অ্যাপ গাইড ২০২৫: ব্যবহার ও ফিচার বাংলায়
টেলিগ্রাম শুধু মেসেজিং নয়, বরং নিরাপদ যোগাযোগ, বড় ফাইল শেয়ারিং এবং চ্যানেল-গ্রুপ তৈরির সুবিধার কারণে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই আর্টিকেলে ধাপে ধাপে টেলিগ্রাম ব্যবহারের নিয়ম ও ফিচারগুলো জানুন।
ডিজিটাল যুগে নিরাপদ ও দ্রুত যোগাযোগের জন্য টেলিগ্রাম একটি কার্যকর সমাধান। এর ক্লাউড-ভিত্তিক স্টোরেজ, ফ্রি অ্যাক্সেস ও মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। তাই ব্যবসা, শিক্ষা কিংবা ব্যক্তিগত যোগাযোগ—সবক্ষেত্রেই টেলিগ্রাম হতে পারে আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।
ভূমিকা
মেসেজিং অ্যাপ বর্তমান ডিজিটাল যুগে যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপের পাশাপাশি এখন বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ ও ফিচারসমৃদ্ধ অ্যাপ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে টেলিগ্রাম (Telegram)। গোপনীয়তা, দ্রুততা এবং বহুমুখী ব্যবহারের কারণে এটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
টেলিগ্রাম অ্যাপ কী?
একটি ক্লাউড-ভিত্তিক ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ, যেখানে ভয়েস মেসেজ, ছবি, ভিডিও কল ডকুমেন্ট লিংক, টেক্সট মেসেজ এবং বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া শেয়ার করতে পারেন ব্যবহারকারীরা। পাভেল দুরভ ও নিকোলাই দুরভ নামের দুই ভাইয়ের উদ্যোগে এটি প্রথম ২০১৩ সালে চালু হয়। আপনি যখন একটি মেসেজ পাঠান, সেটি প্রথমে টেলিগ্রামের সার্ভারে যায়, সেখান থেকে প্রাপকের ডিভাইসে পৌঁছায় এবং ক্লাউডে সংরক্ষণ থাকায় আপনার চ্যাট বা ফাইল যেকোনো ডিভাইস থেকে পাওয়া যায়।
তবে সিক্রেট চ্যাট ছাড়া সাধারণ চ্যাট ক্লাউডে থেকে যায়, যা ব্যাকআপ হিসেবে কাজ করে। হোয়াটসঅ্যাপে ডকুমেন্ট আকারে সর্বোচ্চ ২ জিবি পর্যন্ত ফাইল পাঠানো যায়, তবে টেলিগ্রামে সাধারণ ব্যবহারকারীরাও ২ জিবি এবং Premium ব্যবহারকারীরা ৪ জিবি পর্যন্ত ফাইল পাঠাতে পারেন। মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ সীমিত, কিন্তু এটিতে বিশাল কমিউনিটি তৈরি করা সম্ভব। এছাড়া সিকিউরিটি ও গোপনীয়তার দিক থেকে এই ক্লাউড ভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেক এগিয়ে এবং এটি মোবাইল, কম্পিউটার ও ওয়েব—সব ডিভাইসেই একসাথে ব্যবহার করা যায়।
টেলিগ্রামের বিশেষ ফিচারসমূহ
এই ডিজিটাল কমিউনিকেশন অ্যাপের বিশেষ ফিচারসমূহ হলোঃ সীমাহীন ক্লাউড স্টোরেজ, বড় ফাইল শেয়ারিং, সুপারগ্রুপ ও চ্যানেল, সিক্রেট চ্যাট, মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট, বট (Bots), ভয়েস ও ভিডিও কল, কাস্টমাইজেশন অপশন, ফ্রি ও বিজ্ঞাপনমুক্ত অভিজ্ঞতা এবং উন্নত সার্চ অপশন ইত্যাদি রয়েছে।
এই মেসেজিং অ্যাপে পাঠানো সব ফাইল ক্লাউডে সংরক্ষিত থাকে। মোবাইল, ট্যাব বা কম্পিউটার—যেকোনো ডিভাইস থেকে সহজে অ্যাক্সেস করা যায়। ফোনের মেমোরি কম হলেও সমস্যা হয় না। এটি ব্যবহারকারীদের চ্যাট ডেটা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন দিয়ে সুরক্ষিত করে এবং বিশেষ “Secret Chat” ফিচারে মেসেজ নির্দিষ্ট সময় পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায়।
ফাইল, মেসেজ ও মিডিয়া ক্লাউড সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে, যেকোনো ডিভাইস (ফোন, ট্যাব, কম্পিউটার) থেকে একই অ্যাকাউন্টে লগইন করলে ডেটা একসাথে পাওয়া যায়। একসাথে ২ জিবি পর্যন্ত ফাইল পাঠানো যায়, যা অন্য অনেক অ্যাপে সম্ভব নয় এমনকি গ্রুপে ২ লক্ষ (২০০,০০০); চ্যানেলে সীমাহীন সাবস্ক্রাইবার পর্যন্ত সদস্য যুক্ত করা যায় এবং চ্যানেল ব্যবহার করে সংখ্যক মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়া যায়। এছাড়া টেলিগ্রামে বিভিন্ন ধরনের অটোমেশন বট রয়েছে, যেমন— স্টাডি বট, গেমস বট, নিউজ বট, মিউজিক বট ব্যবসা বা সার্ভিস পরিচালনায় এই বটগুলো খুব কার্যকর। প্রিমিয়াম সংস্করণে অতিরিক্ত কিছু ফিচার থাকলেও সাধারণ ব্যবহারকারীরা বিনামূল্যে প্রায় সব সুবিধা পান কারণ টেলিগ্রাম সাধারণত ব্যক্তিগত ডেটা ব্যবহার করে টার্গেটেড বিজ্ঞাপন দেখায় না; কিন্তু পাবলিক চ্যানেলে স্পন্সরড মেসেজ প্রদর্শন করা হয়। কন্টেন্ট, ফাইল, লিংক, ছবি সবকিছু দ্রুত সার্চ করা যায়। বড় গ্রুপ বা চ্যানেলেও সহজে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
কিভাবে টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুলবেন
কীভাবে টেলিগ্রাম ব্যবহার শুরু করবেন নতুন ব্যবহারকারীরা অনেক সময় তা জানেন না। এই অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই সহজ। কয়েক মিনিটের মধ্যেই শুধু মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি নিরাপদ ও ফ্রি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার শুরু করতে পারবেন। যোগাযোগ, ব্যবসা বা শিক্ষার জন্য—যেকোনো কাজে জনপ্রিয় এই চ্যাটিং অ্যাপটি হতে পারে আপনার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। তাই কিভাবে এই অ্যাকাউন্টটি খুলবেন নিচে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মোবাইলে টেলিগ্রাম ব্যবহার
যারা নিরাপদ, বিজ্ঞাপনমুক্ত এবং দ্রুত মেসেজিং চান, তাদের জন্য টেলিগ্রাম একটি চমৎকার সমাধান। তাই এই অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ ধাপগুলো এবার জেনে নিন। প্রথমে আপনাকে আপনার ডিভাইসে এই অনলাইন চ্যাট প্ল্যাটফর্মটি ইনস্টল করতে হবে। আপনি যদি iPhone ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে App Store থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করুন, আর যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তবে Google Play Store থেকে ইনস্টল করুন।
ইনস্টল শেষে অ্যাপ ওপেন করলে একটি "Start Messaging" বা "Start" বাটন আসবে সেখানে ক্লিক করুন। আপনার দেশের কোড (বাংলাদেশের জন্য +880) নির্বাচন করে আপনার মোবাইল নম্বর লিখুন এরপর “Next” বা “Continue” বাটনে চাপুন। আপনার দেওয়া মোবাইল নম্বরে একটি OTP (One-Time Password) কোড যাবে। কোডটি অ্যাপে লিখে ভেরিফাই করুন। যদি একই নম্বর দিয়ে অন্য ডিভাইসে আগে টেলিগ্রাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তবে সেখানে কোড পাঠানো হতে পারে।
এখন আপনার নাম লিখুন চাইলে একটি প্রোফাইল ছবি আপলোড করুন তাহলে এই তথ্যগুলো অন্যরা আপনার কন্ট্যাক্টে দেখতে পাবে। কন্ট্যাক্ট লিস্টে যাদের নাম আসবে, তাদের সাথে সরাসরি মেসেজ করতে পারবেন। নতুন চ্যাট শুরু করতে উপরের পেনসিল আইকন এ ক্লিক করুন। বন্ধু বা টিম মেম্বারদের নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করতে পারবেন (সর্বোচ্চ ২ লক্ষ সদস্য)। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করুন চাইলে অ্যাপে পাসকোড লক ব্যবহার করতে পারেন এবং ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট অপশনে গিয়ে অন্য কোথাও লগইন করা থাকলে সেগুলো কন্ট্রোল করুন।
ডেস্কটপ ও ওয়েবে টেলিগ্রাম
এই ডিজিটাল কমিউনিকেশন অ্যাপটি শুধু মোবাইলের জন্য নয়, বরং কম্পিউটার (ডেস্কটপ) এবং ওয়েব ব্রাউজার থেকেও ব্যবহার করা যায়। তাদের জন্য ডেস্কটপ ও ওয়েব ভার্সন খুবই উপকারী যারা অফিসে কাজ করেন বা বড় স্ক্রিনে সহজে ফাইল ম্যানেজ করতে চান। অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: https://desktop.telegram.org এবার আপনার অপারেটিং সিস্টেম অনুযায়ী (Windows, MacOS, Linux) ডাউনলোড করুন। ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া শেষ করুন তারপর ইনস্টল শেষে অ্যাপ ওপেন করুন। দুটি উপায়ে লগইন করতে পারবেন: 1. QR কোড স্ক্যান করে (মোবাইলের টেলিগ্রাম অ্যাপ দিয়ে), 2. মোবাইল নম্বর দিয়ে (OTP কোড আসবে)।
যেসব ফিচার পাবেন: ডেস্কটপে বড় স্ক্রিনে সহজে চ্যাট করতে পারবেন, বড় ডকুমেন্ট বা মিডিয়া ফাইল কম্পিউটার থেকেই আপলোড করা যায়, মোবাইল ও ডেস্কটপে একই সময়ে ব্যবহার সম্ভব এবং কম্পিউটার স্ক্রিনে নোটিফিকেশন পপ-আপ আসবে। ওয়েব ভার্সনে যান ব্রাউজার ওপেন করে লিখুন: https://web.telegram.org এবং একই লগইন প্রক্রিয়া মেনে চলুন। এটি মোবাইল অ্যাপের মতোই সহজ ও ব্যবহারবান্ধব। ওয়েব থেকেও মেসেজ পাঠানো, ভয়েস ও ভিডিও কল করা যায়। তবে
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সবসময় চালু রাখুন এবং অপরিচিত ডিভাইসে লগইন করলে কাজ শেষে লগআউট করতে ভুলবেন না। অফিস বা শেয়ারড কম্পিউটারে ব্যবহার করলে Remember Me অপশনটি ব্যবহার করবেন না।
টেলিগ্রামে গ্রুপ ও চ্যানেল তৈরির নিয়ম
টেলিগ্রাম শুধু ব্যক্তিগত মেসেজিং নয়, বরং হাজার হাজার মানুষের সাথে একসাথে যোগাযোগ করার সুযোগ দেয় গ্রুপ এবং চ্যানেল তৈরির মাধ্যমে। মোবাইল বা ডেস্কটপে ক্লাউড ভিত্তিক এই যোগাযোগ মাধ্যমটি ওপেন করে উপরের ডান পাশে থাকা পেনসিল আইকন বা “New Message” অপশনে ক্লিক করুন। সেখান থেকে “New Group” সিলেক্ট করুন। কন্ট্যাক্ট লিস্ট থেকে যাদের যোগ করতে চান, তাদের নির্বাচন করুন, চাইলে পরেও সদস্য যোগ করা যাবে। গ্রুপের জন্য একটি নাম দিন, যদি চান একটি প্রোফাইল ছবি ও (লোগো বা আইকন) যুক্ত করতে পারেন। এখন আপনার গ্রুপ প্রস্তুত। এবার সেটিংসে গিয়ে গ্রুপটিকে Private বা Public হিসেবে সেট করতে পারবেন, তবে গ্রুপে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ সদস্য যোগ করা যায়।
চ্যানেল তৈরির জন্য ও মোবাইলে বা ডেস্কটপে এই অনলাইন চ্যাট প্ল্যাটফর্মটি ওপেন করে পেনসিল আইকন এ ক্লিক করে “New Channel” সিলেক্ট করুন। চ্যানেলের জন্য একটি নাম লিখুন এবং সংক্ষিপ্ত একটি বর্ণনা দিন, যাতে নতুন সদস্যরা বুঝতে পারে চ্যানেলটি কী উদ্দেশ্যে। চাইলে একটি প্রোফাইল ছবি যোগ করুন। চ্যানেল দুই ধরনের হয়: পাবলিক চ্যানেল ও প্রাইভেট চ্যানেল। পাবলিক চ্যানেল সার্চ করলে সবাই খুঁজে পাবে এবং প্রাইভেট চ্যানেল শুধু ইনভাইট লিঙ্ক থাকা ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারবে। প্রাইভেট বা পাবলিক—যেভাবেই তৈরি করুন না কেন, এই ডিজিটাল কমিউনিকেশন অ্যাপ দিয়ে একটি লিঙ্ক দেবে। এই লিঙ্ক শেয়ার করে নতুন সদস্য যুক্ত করা যাবে।
টেলিগ্রাম প্রাইভেসি ও সিকিউরিটি সেটিংস
ব্যক্তিগত তথ্য ও অনলাইন যোগাযোগের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আজকের ডিজিটাল যুগে। শক্তিশালী এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ও কাস্টমাইজড প্রাইভেসি সেটিংস এর কারণে টেলিগ্রাম অন্য অনেক অ্যাপের চেয়ে আলাদা। এই আধুনিক মেসেজিং সার্ভিসটির প্রাইভেসির মধ্যে কি কি রয়েছে তা আলোচনা করা হলো। কে আপনার লাস্ট সিন দেখতে পাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, কে আপনার প্রোফাইল ছবি দেখতে পাবে তা নির্ধারণ করতে পারবেন এবং এই অ্যাপটিতে আপনার ফোন নাম্বার কে দেখতে পাবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, অপশন: Everybody (সবাই), My Contacts (শুধু কন্ট্যাক্টস), Nobody (কেউ নয়)। এছাড়া কে আপনাকে ফোন নাম্বার দিয়ে খুঁজে পাবে সেটিও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
কে আপনাকে গ্রুপ বা চ্যানেলে অ্যাড করতে পারবে সেটি নির্ধারণ করতে পারবেন, কে আপনাকে টেলিগ্রামে কল করতে পারবে সেটি ও নির্ধারণ করতে পারবেন। চাইলে Peer-to-Peer কল নিষ্ক্রিয় করে শুধু সার্ভার-রিলেতে কল চালাতে পারবেন, এতে আইপি অ্যাড্রেস সুরক্ষিত থাকবে। আপনার মেসেজ অন্য কেউ ফরওয়ার্ড করলে আপনার প্রোফাইল লিঙ্ক দেখাবে কি না, সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এবার আসা যাক সিকিউরিটি সেটিংসের প্রসঙ্গে এক্ষেত্রে লগইন করার সময় শুধু OTP নয়, অতিরিক্ত পাসওয়ার্ড সেট করতে পারবেন এবং অ্যাপ ওপেন করতে গেলে একটি PIN/ Pattern/ Password দিতে হবে, চাইলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস আইডি ব্যবহার করা যাবে।
এতে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া কঠিন হয়ে যায়। অ্যাকাউন্টটি কোথায় কোথায় লগইন করা আছে, সেটি চেক করতে পারবেন এবং অচেনা ডিভাইসে লগইন থাকলে সেখান থেকে রিমুভ করতে পারবেন। অটো-ডিলিট মেসেজে (Auto-Delete Messages) নির্দিষ্ট সময় পর মেসেজ নিজে থেকে মুছে যাবে এবং সময় নির্ধারণ করতে পারবেন (২৪ ঘণ্টা, ৭ দিন ইত্যাদি)। এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করে আলাদা চ্যাট শুরু করতে পারবেন। এর মধ্যে মেসেজ কপি বা ফরওয়ার্ড করা যায় না, স্ক্রিনশট নিলেও অপরজন নোটিফিকেশন পাবে। মেসেজের জন্য Self-Destruct Timer সেট করতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময় ধরে অ্যাকাউন্টে লগইন না করলে অ্যাকাউন্ট নিজে থেকেই মুছে যাবে। ডিফল্ট সময় (অর্থাৎ কোন-ইনঅ্যাকটিভিটিতে) বর্তমানে ১৮ মাস; আপনি Settings > Privacy & Security-এ গিয়ে এটি পরিবর্তন করতে পারবেন।
টেলিগ্রাম ব্যবহারের সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা
টেলিগ্রাম এর যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে তেমনি এর কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের জানা দরকার। এখন এই বহুমুখী যোগাযোগের মাধ্যমটির সুবিধা গুলো জানা যাক। ডকুমেন্ট, ভিডিও, অডিও, ছবি বা সফটওয়্যার সহজেই শেয়ার করা যায় এবং সাধারন ব্যবহারকারীরা একসাথে সর্বোচ্চ ২ জিবি পর্যন্ত ফাইল পাঠানো পারে এবং Telegram Premium গ্রাহকরা ৪জিবি পর্যন্ত ফাইল আপলোড করতে পারেন। শেয়ার করা ফাইল মুছে না দিলে চিরদিন ক্লাউডে থেকে যায়, চাইলে যেকোনো ডিভাইস থেকে ডাউনলোড করা সম্ভব। অটো-রিপ্লাই, নিউজ ফিড, মিউজিক, গেমস, ডাউনলোড টুলসহ নানা কাজে বট ব্যবহার করা যায়। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন, সিক্রেট চ্যাট, অটো-ডিলিট মেসেজ ইত্যাদি সিকিউরিটি ফিচার আছে এবং সিক্রেট চ্যাটে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহৃত হয়। মোবাইল, ডেস্কটপ ও ওয়েব—সব প্ল্যাটফর্মেই ব্যবহার করা যায়।
টেলিগ্রাম সম্পূর্ণ ফ্রি, কোনো সাবস্ক্রিপশন ছাড়াই ব্যবহার করা যায়। এই অ্যাপটি ব্যবহারে কিছু সীমাবদ্ধতা ও রয়েছে যা অনেকেরই জানা নেই, তাই এবার সেগুলো জানা যাক। গ্রুপ, চ্যানেল, বট ইত্যাদি ফিচার নতুন ব্যবহারকারীদের কাছে জটিল মনে হতে পারে এবং অনেক প্রাইভেট গ্রুপ/চ্যানেলে পাইরেসি, স্প্যাম বা ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়, তাই ব্যবহারকারী সতর্ক না হলে সমস্যায় পড়তে পারে। সব ফিচার ব্যবহার করতে হলে ভালো ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন। অফিসিয়াল সাপোর্ট সীমিত ব্যবহারকারীদের সমস্যা সমাধানের জন্য লাইভ কাস্টমার সাপোর্ট নেই। সাধারণ চ্যাটে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন নেই, শুধু সিক্রেট চ্যাটে পাওয়া যায়। পরিশেষে বলা যায় এর বড় ফাইল শেয়ারিং, ক্লাউড স্টোরেজ, সিকিউরিটি সেটিংস ও চ্যানেল সুবিধা ব্যবহারকারীদের কাছে অত্যন্ত কার্যকর। তবে, ডিফল্ট এনক্রিপশন না থাকা, জটিল ফিচার ও কম জনপ্রিয়তা কিছুটা সীমাবদ্ধতা তৈরি করে।
উপসংহার
টেলিগ্রাম শুধু একটি মেসেজিং অ্যাপ নয়, বরং এটি একটি নিরাপদ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যেখানে শিক্ষা, ব্যবসা, বিনোদন ও যোগাযোগ—সবকিছু একসাথে করা সম্ভব। ২০২৫ সালে যারা স্মার্ট ও নিরাপদ অনলাইন অভিজ্ঞতা চান, তাদের জন্য এই অ্যাপটি হতে পারে সেরা সমাধান।
২০২৫ সালে নিরাপদ, বিজ্ঞাপনমুক্ত এবং ফিচারসমৃদ্ধ মেসেজিং অ্যাপ খুঁজছেন? টেলিগ্রাম হতে পারে আপনার জন্য সেরা সমাধান। যদি আর্টিকেলটি উপকারী মনে হয়, তবে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আরও টেকনোলজি গাইড পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং এক্সপ্রেস ইন্সটিটিউটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url