হিন্দু ধর্মের মৌলিক শিক্ষাগুলো ও আধুনিক জীবনে এর প্রভাব

আপনি কি হিন্দু ধর্মের মূল শিক্ষা ও তার আধুনিক জীবনে প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলে হিন্দু ধর্মের আদি শিক্ষা ও তার সমসাময়িক জীবনে প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে। তাই এই প্রাচীন ধর্মের শিক্ষাগুলো আধুনিক জীবনে কেমন প্রভাব ফেলে তা জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
হিন্দু ধর্মের মূল শিক্ষা ও আধুনিক জীবনে প্রভাবের প্রতীক
নিচে আপনাদের জন্য হিন্দুধর্মের নৈতিক শিক্ষা এবং সমসাময়িক জীবনে তার প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই হিন্দু ধর্মের মৌলিক শিক্ষাগুলো ও আধুনিক জীবনে এর প্রভাব জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে এই ধর্মীয় দর্শন ও তার সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে জেনে নিন।

ভূমিকা

হিন্দু ধর্ম বিশ্বের প্রাচীন ধর্ম। ধর্ম (নৈতিক কর্তব্য), কর্ম (কার্য ও ফল), মোক্ষ (জন্ম মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্তি) এবং আত্ম-উপলব্ধি (নিজের প্রকৃত স্বরূপ অনুধাবন) এর মৌলিক শিক্ষাগুলোর মধ্যে অন্যতম। মানুষের জীবনযাত্রা সহজ-সরল ও উন্নত করতে এটি সাহায্য করে এবং আধুনিক জীবনেও এই শিক্ষাগুলো প্রাসঙ্গিক।

হিন্দু ধর্মের ইতিহাস ও উৎস

হিন্দু ধর্ম একটি প্রাচীন ও জটিল ধর্ম, যার শিকড় গভীরভাবে প্রোথিত রয়েছে হাজার হাজার বছর আগের বৈদিক যুগে। এটি বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মতের সংমিশ্রণে বিকশিত হয়েছে এবং কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠাতার মাধ্যমে এর সূচনা হয়নি। বৈদিক যুগ (খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ১৫০০ থেকে ৫০০) :বেদ হিন্দু ধর্মের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ। বেদ হচ্ছে চারটি। ‘বেদ’ নামক এই ধর্মগ্রন্থটি বৈদিক যুগে রচিত হয়। এই চারটি বেদে ধর্মীয় আচার, সঙ্গীত, হোমযজ্ঞ এবং দার্শনিক ভাবনা বর্ণিত রয়েছে।

  1. উপনিষদঃ বৈদিক যুগের পরবর্তী যুগকে উপনিষদ বলে। এই যুগে উপনিষদ রচিত হয়। আত্মা, পরমাত্মা ও মোক্ষ বিষয়ক আলোচনা শুরু হয় এই যুগে। দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ে গভীর আলোচনা করা হয়েছে উপনিষদে।
  2. মহাকাব্য ও পুরাণ যুগঃ রামায়ণ ও মহাভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাকাব্য। শিব পুরাণ, বিষ্ণুপুরাণ এবং বিভিন্ন পুরাণ হিন্দু ধর্মকে গল্প, নীতিকথা ও ভক্তির মাধ্যমে সকলে কাছে পৌঁছে দেয়।
  3. বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রভাবঃ উপজাতিদের বিশ্বাস, স্থানীয় ধর্ম এবং বিভিন্ন দার্শনিক মতবাদের বিকাশে অবদান রেখেছে হিন্দু ধর্ম যা বিভিন্ন ধর্ম এবং সংস্কৃতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।

হিন্দু ধর্মের প্রধান বিশ্বাস ও চর্চা

হিন্দু ধর্মের প্রধান বিশ্বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রহ্ম, আত্মা, সংসার, কর্ম, মোক্ষ, ধর্ম । ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয় তার কোন আকার নেই তিনি নিরাকার। সকল জীবের মধ্যেই তিনি রয়েছেন,সকল জীবের মধ্যে তিনি নিরাকার রূপে বিরাজ করেন। ঈশ্বর নিরাকার হলেও তিনি সাকার রূপ ধারণ করতে পারেন।বিষ্ণু, দুর্গা, কালী, শিব এসব ঈশ্বরের সাকার রূপ। হিন্দু ধর্মের একটি অন্যতম বিশ্বাস প্রত্যেক কর্মেরই একটি ফল রয়েছে যাকে কর্মফল বলে। ভালো কর্মের ফল ভালো এবং খারাপ কর্মের ফল খারাপ হয়। সংসার বলা হয় জন্ম মৃত্যু ও পুনর্জন্মের চক্রকে এবং এই চক্র থেকে চিরমুক্তি পেয়ে আত্মা যখন ব্রহ্মের সঙ্গে এক হয়ে যায় তখন তাকে মোক্ষ বলে। ধর্ম আমাদের নৈতিক শিক্ষা দেয় এবং সঠিক পথে চলতে শেখায়।

হিন্দু ধর্মের প্রধান চর্চাগুলো হচ্ছে পূজা, যোগ ও ধ্যান, উপবাস, তীর্থযাত্রা ইত্যাদি। হিন্দুধর্মালম্বীরা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করে যা ঈশ্বরের সাকার রূপ। বিভিন্ন যোগ সাধনা শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে। নির্দিষ্ট দিনে উপবাস করতে হয়। উপবাসের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক উন্নতি, আত্ম সংযম ও ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা যায়। এছাড়াও উপবাস করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। কাশী, রামেশ্বরম, পুরী, বৃন্দাবন এগুলো হচ্ছে তীর্থস্থান। এইসব পবিত্র স্থানে তীর্থযাত্রা করলে পাপ মোচন হয়, শারীরিক ও মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।

গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু উৎসব ও তাদের মাহাত্ম্য

সারা বছর জুড়েই হিন্দুরা বিভিন্ন উৎসব পালন করে। তাই বলা হয় বারো মাসে তেরো পার্বণ। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুর্গাপূজা, মহা শিবরাত্রী, দীপাবলি, জন্মাষ্টমী, রথযাত্রা ইত্যাদি।

দুর্গাপূজাঃ

দেবী দুর্গার আরাধনাকে কেন্দ্র করে শারদীয় দুর্গাপূজা করা হয়। শারদীয় দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মের এক মহৎ ও মহিমান্বিত উৎসব। নারীর শক্তির পূর্ণ স্বীকৃতি ধর্মের জয় এবং অধর্মের বিনাশের প্রতীক এই দুর্গাপূজা। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষ অর্থাৎ শরৎকালের দুর্গাপূজা শারদীয় দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষ অর্থাৎ বসন্তকালের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। সাধারণত বসন্তকালে দুর্গাপূজা হলেও রামচন্দ্র অকালে দেবীর পূজা করেছিলেন রাবণকে বধ করার জন্য, তাই শারদীয় দুর্গাপূজাকে ‘অকালবোধন’ বলে।

মহাশিবরাত্রিঃ

মহাশিবরাত্রির রাতে শিব পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। আবার বলা হয় সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব করেছিলেন শিব এই রাতেই। প্রতিবছর ভক্তরা ফাগুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রির দিনে সকল পাপ মোচন করার জন্য শিবের মন্ত্র জপ করে এবং শিবলিঙ্গে দুধ, জল, মধু, ঘি ও বেলপাতা নিবেদন করে তার কৃপা লাভের চেষ্টা করে।

জন্মাষ্টমীঃ

পৃথিবীতে যখন অধর্ম বেড়ে যায় তখন ধর্মকে পুনঃস্থাপনের জন্য ভগবান বিভিন্ন অবতার রূপে আবির্ভূত হন। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন কে জন্মাষ্টমী বলে। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে জন্মাষ্টমীর দিনে ভক্তরা শ্রীকৃষ্ণের পূজা করে, উপবাস রেখে তার জন্মদিন উদযাপন করে।

হিন্দু ধর্মে ধর্মগ্রন্থের ভূমিকা

ন্যায় বিচার, নৈতিকতা এবং সমাজের কল্যাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করে হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলো। শ্রুতি ও স্মৃতি এই দুই ভাগে ভাগ করা হয় ধর্মগ্রন্থগুলোকে। এই ধর্মগ্রন্থগুলোর অনুসারীদের জীবনযাপন, নীতি- নৈতিকতা ,আচার-অনুষ্ঠান ও আধ্যাত্মিক পদপ্রদর্শন করে এবং হিন্দু ধর্মের ভিতি স্থাপন করে। এসব গ্রন্থে বিভিন্ন পূজা-অর্চনার নিয়ম ও পদ্ধতি এবং ঈশ্বরের স্বরূপ সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। এই বিষয়গুলোর বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে বেদ, উপনিষদ এবং অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলোতে।

বেদ হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ। বেদ মূলত চার প্রকার ঋগ্বেদ, সামবেদ, যর্জুরবেদ, অথর্ববেদ। ১০,৬০০ টি শ্লোক রয়েছে ঋগ্বেদে, ১৮৭৫ টি শ্লোক রয়েছে সামবেদে যার মধ্যে ১৫৪৯ টি শ্লোক নেওয়া হয়েছে ঋগ্বেদ থেকে আবার যর্জুবেদে প্রায় ১৯৭৫ টি শ্লোক রয়েছে যা দুটি ভাগে বিভক্ত:কৃষ্ণ যজুর্বেদ ও শুক্ল যজুর্বেদ এবং ৫৯৭৭ টি শ্লোক রয়েছে অথর্ববেদে। রামায়ণ, মহাভারত এবং অন্যান্য পুরাণগুলো সাহিত্যে ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় এইসব ধর্মগ্রন্থ থেকে। হিন্দু ধর্মে জীবনের প্রতিটি স্তরকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেমন: শৈশব, যৌবন, গৃহস্থ ও সন্ন্যাস। জীবনের প্রতিটি স্তরে কেমন জীবন যাপন করতে হবে তার পথ দেখায় এই ধর্মগ্রন্থগুলো।

হিন্দু ধর্ম ও আধুনিক জীবনে মানবিক মূল্যবোধ

আধুনিক জীবনে হিন্দু ধর্মের মানবিক মূল্যবোধগুলো খুবই প্রাসঙ্গিক। এই মূল্যবোধগুলো চারটি স্তম্ভ অর্থাৎ ধর্ম, কর্ম, অর্থ ও মোক্ষ এর উপর ভিত্তি করে গঠিত যা নৈতিক ও দৈনন্দিন জীবন যাপনে মানুষকে সাহায্য করে। অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়াকে সহানুভূতি বলে, অন্যের জিনিস আত্মসাৎ বা চুরি না করাকে অস্তেয় বলে, শারীরিক বা মানসিকভাবে কাউকে আঘাত না করাকে অহিংসা বলে।

মানুষের মধ্যে সহানুভূতি ও সহনশীলতা বাড়ায় এবং আধুনিক সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে অহিংসা সাহায্য করে। সদা সত্য কথা বলা, সত্যের পথে চলা, দান করা, ক্ষমা করা, অন্যকে সাহায্য করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ইত্যাদি বিষয়গুলোর শিক্ষা আমার ধর্ম থেকে পাই। ধর্ম আমাদের সঠিক পথে চলতে এবং জীবনকে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে। ধর্ম আমাদের দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালন করতে শেখায়। আধুনিক জীবনে, মানুষকে আরো ন্যায়পরায়ণ, সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বশীল হতে উৎসাহিত করে এই মানবিক মূল্যবোধগুলো।

হিন্দু ধর্মের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব

ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সমাজের একটি অবিচ্ছেদ অংশ হিন্দু ধর্ম যা কেবল একটি ধর্ম নয় বরং সমাজ গঠনের একটি নৈতিক কাঠামো এবং সংস্কৃতির বহুমুখী প্রকাশ। হিন্দুধর্ম অনুসারে ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস এই চারটি পর্যায় বিভক্ত জীবন। মানুষের আয়ু ১০০ বছর ধরা হয় তাকে ২৫ বছর করে এই ৪ পর্যায়ে ভাগ করা হয়।

হিন্দু সমাজে বর্ণপ্রথা লক্ষ্য করা যায়। বর্ণ প্রথা সময়ের ব্যবধানে বিভেদ মূলক রূপ নেই কিন্তু এটি মূলত কাজের ভিত্তিতে সমাজকে সংঘটিত করার জন্য তৈরি করা হয়ে ছিল। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র এই চারটি প্রধান বর্ণ তবে এই প্রথাটি বিলুপ্ত বা পরিবর্তনের জন্য অনেক আন্দোলন হয়েছে। গুরুজনদের সম্মান করা এবং ছোটদের স্নেহ করা, পিতা-মাতার সেবা, ‘অতিথি দেবো ভবা’ অর্থাৎ অতিথিকে নারায়ণ ভেবে তার সেবা করা হিন্দু ধর্মের একটি অন্যতম মূল্যবোধ।

হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন প্রাচীন উপাসনার রীতি

উপাসনার বিভিন্ন প্রাচীন রীতিগুলো মধ্যে রয়েছে তন্ত্র সাধনা, জপ ধ্যান বা যোগ সাধনা, হোম যজ্ঞ, ভজন, কীর্তন, মন্ত্রপাঠ, আরতি, পূজা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ খুলে দেয় এই উপাসনার রীতিগুলো। উপাসনার মাধ্যমে বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করলে আত্মশুদ্ধি হয় এবং দেবতাদের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করা হয় ।

ঈশ্বরের নাম বা মন্ত্র বারবার উচ্চারণ করাকে জপ বলে এবং এর মাধ্যমে ঈশ্বরের সাথে একাত্ম হওয়া যায়।দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে আহুতি দেওয়া হয় অগ্নি এবং মন্ত্রের মাধ্যমে তাকে যজ্ঞ বলে। ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভের একটি উপায় ঈশ্বরের মহিমা কীর্তনের গান করা যাকে ভজন বলে।

হিন্দু ধর্মে শান্তি ও সমাধানের পথ

শান্তির আরেক নাম ধর্ম। প্রতিটি ধর্মেরই মূল কথা হচ্ছে শান্তি। হিন্দু ধর্ম আমাদের শৃঙ্খল এবং শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপন করতে শেখায়। এই ধর্মের মূল শিক্ষায় আত্মজ্ঞানের মাধ্যমে মুক্তি, শান্তি, সহনশীলতা এবং সকল জীবের প্রতি সহানুভূতির গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’ওম সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ’ এই প্রার্থনা থেকেই বুঝা যায়, হিন্দু ধর্ম শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সার্বিক শান্তি ও কল্যাণের পথ প্রদর্শন করে। ঈশ্বরের মাঝে নিজেকে বিলীন করে দিলে, ফলের আশা না করে সকল কাজ ঈশ্বরের নামে করলে জীবনের শান্তি ও মুক্তি লাভ করা সম্ভব।

ধর্মের দশটি লক্ষণের কথা বলা হয়েছে মনুসংহিতায়। এই গুণাবলী গুলো কোন ব্যক্তি নিজের মাঝে আয়ত্ত করতে পারলে জীবনে শান্তি ও মুক্তি লাভ করতে পারবে। এই গুণাবলী গুলো হলো: ধৈর্য, ক্ষমা, সংযম, চুরি না করা, শুচিতা, ইন্দ্রিয় নিগ্রহ, বুদ্ধি, বিদ্যা, সত্যম্, রাগ না করা। প্রত্যেক মানুষের নিজ নিজ কর্তব্য বা স্বধর্ম পালন শান্তির পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শ্রীমদ্ভগবদ গীতার তৃতীয় অধ্যায়ের ৩৫ নম্বর শ্লোক বলা আছে ‘শ্রেয়ান্ স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ’।

উপসংহার

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম হিন্দু ধর্ম। হিন্দু ধর্মকে সনাতন ধর্ম বলা হয়। ‘সনাতন’ শব্দের অর্থ চিরন্তন, শাশ্বত, নিত্য অর্থাৎ যা ছিল, যা আছে এবং যা থাকবে। এর কোন শুরু বা শেষ নেই এটা চিরকাল ধরে চলে আসছে। হিন্দু ধর্মকে চিরায়ত রেখেছে যুগে যুগে এর বিবর্তনশীলতা এবং সার্বজনীনতা।
আশা করি এই লেখাটি আপনার জন্য উপকারী হয়েছে এবং হিন্দু ধর্মের মৌলিক শিক্ষা ও তার আধুনিক জীবনে প্রভাব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে সাহায্য করেছে। আপনি যদি এ ধরনের আরও তথ্যবহুল ও গবেষণামূলক আর্টিকেল পেতে চান, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্রিল্যান্সিং এক্সপ্রেস ইন্সটিটিউটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url