দুর্গাপূজা ২০২৫ – তারিখ, ইতিহাস, সাজসজ্জা ও খাবার গাইড

দুর্গাপূজা ২০২৫ আসছে! জানুন পূজার তারিখ-সময়, দেবীর আগমন কাহিনী, মণ্ডপ সাজসজ্জার আইডিয়া, ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকা, ফ্যাশন ট্রেন্ড ও প্যান্ডেল হপিং-এর স্মার্ট টিপস একসাথে।
দুর্গাপূজা ২০২৫ – মণ্ডপ সাজসজ্জা ও প্যান্ডেল হপিং ছবি
দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির অন্যতম বড় সামাজিক উৎসব। আশ্বিন মাসে দেবী দুর্গার আগমনের মাধ্যমে আনন্দের আবহ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এই গাইডে রয়েছে পূজার সময়সূচি, দেবীর ইতিহাস, সাজসজ্জা, ভোগ, ফ্যাশন ট্রেন্ড এবং প্যান্ডেল হপিং টিপস।

ভূমিকা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবগুলির একটি দুর্গাপূজা। প্রতিবছর আশ্বিন মাসে মা দুর্গার আগমনের মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হয়, আর আনন্দে মেতে ওঠে সর্বস্তরের মানুষ। শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য পরিচয়।

দুর্গাপূজা ২০২৫ এর তারিখ ও সময়

প্রতিবছর শরৎকালে দুর্গাপূজা পালিত হয় এবং মূলত পাঁচ দিনব্যাপী পূজা অনুষ্ঠিত হলেও মহালয়ার মধ্য দিয়েই এর সূচনা ঘটে। ২০২৫ সালে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবর মাসের প্রথম দিন পর্যন্ত চলবে শারদীয়া পূজা। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার মহালয়া হবে, এই দিন ভোরে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীর আগমনের আহ্বান জানানো হয়। দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠী পূজায়, আর মহাষষ্ঠী পূজা হবে ২৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার। ২৮ সেপ্টেম্বর, রবিবার মহাসপ্তমীতে কলাবউ স্নান ও দেবীর মূল পূজা শুরু হয়। মহাঅষ্টমীতে অঞ্জলি, কুমারী পূজা এবং সন্ধিপূজা পালিত হবে, যা ২০২৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার।

মহানবমী পূজা ৩০ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, এই দিনে হোম ও পূর্ণাহুতি দেওয়া হয়। ১ অক্টোবর, বুধবার বিজয়া দশমী এই দিন দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয় এবং সবাই একে অপরকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানায়। পূজার দিনগুলির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে সেগুলো হলোঃ
  • ষষ্ঠীঃ দেবীর প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা, 
  • সপ্তমীঃ দেবীর নবরূপ আরাধনা শুরু। 
  • অষ্টমীঃ পূজার সবচেয়ে মহিমান্বিত দিন, (যখন ভক্তরা অঞ্জলি দিয়ে দেবীর কাছে প্রার্থনা করে)।
  • নবমীঃ শক্তির আরাধনা ও হোম যজ্ঞের মাধ্যমে দেবীর পূজা সম্পন্ন হয়।  
  • দশমীঃ দেবীর বিদায় এবং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও আনন্দ ভাগাভাগির দিন।

দুর্গাপূজার ইতিহাস ও ধর্মীয় তাৎপর্য

পুরাণে একটি বিখ্যাত কাহিনী পাওয়া যায় দুর্গাপূজার সূচনা সম্পর্কে। দীর্ঘ তপস্যার ফলে অদম্য শক্তি অর্জন করে স্বর্গ ও পৃথিবী দখল করতে শুরু করে মহিষাসুর নামে এক অসুর। অসুররাজ মহিষাসুর ব্রহ্মার কাছ থেকে এক বিশেষ বর লাভ করেছিল—যে তাকে কোনো দেবতা বা পুরুষ হত্যা করতে পারবে না। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের কাছে দেবতারা সাহায্য প্রার্থনা করেন তার হাতে পরাজিত হয়ে। তখন তিন মহাশক্তির তেজ ও শক্তি মিলে সৃষ্টি হয় মহাশক্তি দেবী দুর্গার।

প্রতিটি দেবতা তাঁকে অস্ত্র দান করেন কারণ তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন দশভূজা রূপে—শিবের ত্রিশূল, বিষ্ণুর চক্র, অগ্নির শিখা, বায়ুর ধনুক-বাণ, ইন্দ্রের বজ্র ইত্যাদি। মহিষাসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন দশভুজা দেবী সিংহবাহিনী রূপে এবং অবশেষে মহিষাসুর রূপ পরিবর্তন করে নানা ছলচাতুরী করলেও অসুরকে বধ করে ধর্ম ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করেন। দেবী দুর্গার পূজা সেই থেকেই শুরু হয় এবং প্রতিবছর আশ্বিন মাসে তাঁর আগমন উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। প্রাচীন কালে মূলত বসন্তকালে (চৈত্র মাসে) অনুষ্ঠিত হত দুর্গাপূজা, তাই একে “বাসন্তী পূজা” বলা হতো। পরে শরৎকালে দেবী দুর্গার পূজা করেন রামচন্দ্র লঙ্কাকাণ্ডের আগে (রামায়ণে এ ঘটনার উল্লেখ আছে)।

যুদ্ধজয়ের জন্য দেবীকে সন্তুষ্ট করতে রাম শরৎকালে অকাল পূজা করেন এবং এই পূজায় পরবর্তীতে জনপ্রিয় হয়ে আজকের শারদীয় দুর্গোৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পুরাণের এই উৎস কাহিনীর মাধ্যমে বোঝানো হয় অন্যায় যত শক্তিশালী হোক, শেষপর্যন্ত ন্যায়ের জয় হবেই। নারীশক্তি হলো বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মূল শক্তি। দেবী দুর্গা কেবল যুদ্ধের দেবী নন, তিনি মা, তিনি শক্তির উৎস, তিনি ন্যায় ও ধর্মের প্রতীক।

বাড়ি ও মণ্ডপ সাজসজ্জা

দুর্গোৎসব শুধু ধর্মীয় পূজা নয়, এটি সাংস্কৃতিক ও শিল্পমুখর এক মহোৎসব। প্রতিটি পূজার সময় বাড়ি এবং মণ্ডপকে সাজানো হয় এক বিশেষ ডিজাইন বা রূপে। বাড়ি সাজানোর প্রথার মধ্যে রয়েছে : ফুল ও লাইট লাগানো, দেবী প্রতিমা স্থাপন, রঙ ও থিম ইত্যাদি। জুঁই, কুমুদ, গুলাপ ও গন্ধরাজ ফুল দিয়ে বাড়ির প্রবেশপথ ও পূজাস্থল সাজানো হয় এবং রঙিন বাতি, LED লাইট ডানা-আকৃতির লাইট স্ট্রিং দিয়ে বাড়ি রাতের আকাশের মতো দীপ্তিময় করা হয়। পাথর বা মাটির ছোট প্রতিমা শোভা বৃদ্ধি করে তাই বাড়িতে ছোট প্রতিমা থাকলে তাঁকে শুভ ও পরিচ্ছন্ন স্থানে স্থাপন করা জরুরি। সোনালী, ধূসর, লাল ও কমলা হালকা শারদীয় রং ব্যবহার করলে পূজাস্থল উজ্জ্বল ও আরামদায়ক দেখায়।আধুনিক ঘরে শুধু কয়েকটি ফুল ও লাইট দিয়ে সরল সাজের মিনিমালিস্ট থিমও জনপ্রিয়।

মণ্ডপ সাজানোর ও বেশকিছু প্রথা রয়েছে সেগুলো হলোঃ প্রেজেন্টেশন স্টাইল নির্বাচন (পারম্পরিক থিম ও আধুনিক থিম), আলোকসজ্জা ও প্রকল্প, আর্টিস্টিক ইনস্টলেশন, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ ইত্যাদি। পারস্পরিক থিমঃ পিতলের দেবী, মন্দির ও হিন্দু পুরাণের গল্প ইত্যাদি করা হয় এই শৈলীতে। আধুনিক থিমঃ ডিজিটাল আর্ট, জগৎ-নকশা, পরিবেশবান্ধব ও রিসাইক্লড মেটেরিয়াল দিয়ে নির্মিত কনসেপ্ট। রাতে দর্শনার্থীরা যেন আলোর খেলা ও কনসেপ্ট উপভোগ করতে পারেন তার জন্য লেজার, LED ও হালকা প্রোজেকশন ব্যবহার করা হয়। শিশুদের আকর্ষণ করার জন্য শিক্ষামূলক বা পরিবেশ সচেতন থিমও দেখা যায়। এছাড়াও মণ্ডপে শুধু প্রতিমা নয়, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান, নৃত্য ও নাটকের আয়োজন করা হয়।
  

ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জা

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাংলার মানুষ এই শারদীয়া দুর্গোৎসবে ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জা ব্যবহার করে আসছেন। ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জার মূল বৈশিষ্ট্য হলো: প্রাকৃতিক উপকরণ (পাতা, ফুল, মাটি, কাঠ), লোককলা ও হস্তশিল্প (খোদাই, বাঁশ, পটচিত্র ও কাপড়ের কাজ), ধর্মীয় অর্থবোধ এবং সরাসরি দর্শনীয়তা। ফুলের আকার, রঙ ও বিন্যাসের মাধ্যমে পূজাস্থলকে উজ্জ্বল ও সৌন্দর্যময় করা হয় এবং প্রতিমা ও মণ্ডপের প্রবেশপথে ফুলের মালা দিয়ে সাজানো হয় গন্ধরাজ, গোলাপ, কুমুদ ও জুঁই ইত্যাদি ফুল ব্যবহার করে।

মাটির বা কাগজের পটচিত্রে মহিষাসুর বধ, দেবী দুর্গার গল্প, দেবতা ও অসুরদের চিত্রাঙ্কন করা হয় এবং প্রতিমার পিছু মাটি দিয়ে নকশা, বাঁশের ফ্রেম, কাঠের খোদাই—এসব ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জার অংশ। এছাড়াও মণ্ডপ ও প্যান্ডেলগুলোতে সিন্দুর, অল্প রঙিন তন্তু ও কাপড়ের খোদাই করা কাজ ব্যবহৃত হয়। মন্ডপে শুধু বৈদ্যুতিক আলো নয় মাটির প্রদীপ ও মোমবাতি, মাটির বাতি বা মাটির দেবীপাটি প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

দুর্গাপূজার বিশেষ খাবার

পূজার দিনগুলোতে বিশেষ ভোগ, মিষ্টি, ঐতিহ্যবাহী রান্না এবং স্ট্রিট ফুড ভক্তদের আনন্দকে দ্বিগুণ করে তোলে। খাবারের আলাদা স্বাদ ও আয়োজন থাকে দেবী দুর্গার আগমনোৎসবের সময় প্রতিটি বাড়ি, মণ্ডপ ও মেলায়। দুর্গাপূজার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে লুচি ও আলুর দম (সকালের নাশতায়), পোলাও ও ফ্রাই (সপ্তমী ও অষ্টমীর দুপুরের খাবার) এবং মিষ্টি (প্রতিটি বাড়ি ও মেলায় অপরিহার্য)।

এছাড়াও প্যান্ডেল হপিং-এর সময় স্ট্রিট ফুডের আলাদা কদর থাকে, যেমন: চাউমিন, কাটলেট, রোল (তরুণদের কাছে জনপ্রিয়), আইসক্রিম, জিলাপি ও ঘুগনি (ছোট থেকে বড় সবার প্রিয়) এবং ফুচকা ও চটপটি ইত্যাদি। এছাড়াও বর্তমানে অনেক পরিবার দুর্গাপূজায় নতুন নতুন খাবার যুক্ত করছে— চাইনিজ ও কন্টিনেন্টাল ডিশ, বেকড ফুড যেমন পেস্ট্রি, কেক এবং ফিউশন রেসিপি যেমন পনির, মোমো ইত্যাদি।
  

ভোগ ও মিষ্টান্ন

ভোগ মূলত অর্ঘ্য বা দেবীকে নিবেদনের প্রতীক। ভক্তদের মাঝে সার্বজনীনভাবে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয় দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করা ভোগ যা সমতার প্রতীক—ধর্ম, জাতি বা অবস্থান নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে ভোগ গ্রহণ করে, আর মিষ্টান্ন উৎসবকে করে তোলে আরও আনন্দঘন। পূজার ভোগ মানেই ঘি, চাল, ডাল ও সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি। একসঙ্গে নানা সবজি (বেগুন, বাঁধাকপি আলু, মটরশুঁটি, কুমড়ো ইত্যাদি) মশলা দিয়ে তৈরি সুস্বাদু তরকারি লাবড়া এবং খিচুড়ির সঙ্গে ভাজা পদ (আলু ভাজা ও বেগুনি) না হলে ভোগ অসম্পূর্ণ মনে হয়।

খেজুর, কুল, কাঁচা আম বা টমেটো দিয়ে তৈরি মিষ্টি-টক চাটনি। চাল, দুধ, চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় পায়েস এবং এটি ভোগের অপরিহার্য মিষ্টান্ন। দুর্গাপূজার সময় সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছানা দিয়ে তৈরি সন্দেশ। বাংলার পরিচিতি বিশ্বজোড়া, দুর্গাপূজায় রসগোল্লার চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণে। বর্ধমান ও টাঙ্গাইলের বিশেষ ল্যাংচা ও চমচম মিষ্টি পূজার দিনে ঘরে ঘরে পাওয়া যায়। পূজার মেলায় বিশেষভাবে জনপ্রিয় জিলাপি ও মিষ্টি দই। এছাড়া দুধের ঘনত্ব ও মিষ্টতায় তৈরি পায়েস ও ক্ষীর দেবীর ভোগ ও পারিবারিক আয়োজনে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মূলত পূজার সময়ে মিষ্টি হলো অতিথি আপ্যায়নের মূল অংশ।

দুর্গাপূজা ফ্যাশন ট্রেন্ড ২০২৫

দেবী দুর্গার পূজার দিনগুলোতে যেমন মণ্ডপে ভক্তরা ভিড় করেন, তেমনি প্রতিটি মানুষ নিজেকে নতুন পোশাক ও সাজে রাঙাতে চান। মহিলাদের জন্য ফ্যাশন ট্রেন্ডের মধ্যে রয়েছে শাড়ি ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক যেমন: মারুন, রেড ও অফ-হোয়াইট রঙের শাড়ি দেবীর আবাহনী রূপকে প্রতিফলিত করে এবং সিল্ক ও তাঁতের শাড়ি আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এগুলোর মধ্যে আবার কিছু আধুনিক টাচ রয়েছে যেমন: ফিউশন শাড়ি (বেল্ট, কেপ বা জ্যাকেটের সঙ্গে), টেম্পল জুয়েলারি, অক্সিডাইজড জুয়েলারি এবং লেহেঙ্গা-স্টাইল শাড়ি তরুণীদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ তৈরি করবে।

পুরুষদের জন্য স্টাইল ট্রেন্ডে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পাঞ্জাবি, লিনেন, কটন ও সিল্কের কুর্তা আরামদায়ক ও আকর্ষণীয় দুটোই, আর নেহরু কোট বা জ্যাকেটের সঙ্গে কুর্তার মিশ্রণ আরো দারুণ মানাবে। তবে দিন দিন ডেনিমের সঙ্গে কুর্তা তরুণদের মাঝে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে এবং এর সঙ্গে লোফার, জুতি ও স্নিকার্স – ঐতিহ্য ও স্টাইলের মিশ্রণে ব্যবহার হচ্ছে। শিশুদের স্টাইল স্টেটমেন্টে রয়েছে মেয়েদের জন্য ছোট লেহেঙ্গা, কটন শাড়ি ও ফ্রক এবং ছেলেদের জন্য রঙিন কুর্তা, পাঞ্জাবি বা জিন্স। পুরুষদের জন্যে ব্রেসলেট, সানগ্লাস ও স্মার্ট ওয়াচ মণ্ডপে আড্ডার জন্য যথেষ্ট ট্রেন্ডি। তবে নারীদের জন্য ন্যাচারাল মেকআপ লুক অথবা বোল্ড লুক এবং হেয়ারস্টাইলে খোলা চুলে ফুলের সাজ, খোঁপা, ব্রেইডেড স্টাইল ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়।

প্যান্ডেল হপিং গাইড ও ভ্রমণ টিপস

দেবী দুর্গার আগমনোৎসব মানেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, আলো-সাজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর বন্ধু-পরিবারের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো আর এই ভ্রমণকেই বলা হয় প্যান্ডেল হপিং। তবে ভ্রমণ হবে আরও আরামদায়ক ও নিরাপদ যদি আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি কিছু পরিকল্পনা ও টিপস মেনে চলা হয়। কাছাকাছি কয়েকটি মণ্ডপ একসঙ্গে ঘোরার চেষ্টা করুন এবং যেসব এলাকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় মণ্ডপ রয়েছে সেগুলোর তালিকা আগে থেকেই তৈরি করুন এতে সময় ও শক্তি দুটোই বাঁচবে। সন্ধ্যা ও রাতেই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় বিশেষ করে নবমী ও দশমীতে ভিড় অনেক বেড়ে যায়, তাই ভিড় এড়াতে চাইলে দুপুর বা বিকেলের দিকে মণ্ডপ ভ্রমণ করতে পারেন।

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করলে পার্কিং সমস্যা হতে পারে, তাই বিকল্প পরিকল্পনা রাখুন এবং নেভিগেশন ও রুট জানতে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করুন, তাই মোবাইল পুরো চার্জ করে বের হন সম্ভব হলে পাওয়ার ব্যাংক রাখুন। সঙ্গে একটি পানির বোতল এবং কিছু হালকা খাবার রাখতে পারেন কারণ ভিড়ের মধ্যে বসে খাওয়ার জায়গা সব সময় নাও পাওয়া যেতে পারে, তবে স্ট্রিট ফুড খেতে চাইলে স্বাস্থ্যসম্মত দোকান বেছে নিন। খেয়াল রাখতে হলে পোশাক যেন হালকা ও আরামদায়ক হয় এবং মহিলাদের জন্য ফ্ল্যাট বা কম হিল জুতো, আর পুরুষদের জন্য আরামদায়ক স্নিকার্স সবচেয়ে ভালো। নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু টিপস মেনে চলুন ভিড়ের মধ্যে পকেটমার সক্রিয় থাকে, তাই সাবধান থাকুন মূল্যবান গয়না বা অতিরিক্ত টাকা না রাখাই ভালো এবং বাচ্চাদের হাতে পরিচয়পত্র বা ফোন নম্বর লিখে দিন।

উপসংহার

শারদীয়া দুর্গোৎসব শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি এক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলা। ভোগ, সাজসজ্জা, প্যান্ডেল হপিং, ফ্যাশন—সব মিলিয়ে দুর্গাপূজা হলো আনন্দ ও ভ্রাতৃত্বের এক মহোৎসব যেখানে সকল মানুষ ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়।
দুর্গাপূজা কেবল দেবীর আরাধনা নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে এই উৎসব উপভোগ করুন, প্যান্ডেল ঘুরুন, ভোগ ও মিষ্টির স্বাদ নিন এবং শারদীয়ার আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিন। যদি আর্টিকেলটি উপকারী মনে হয়, বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং আপনাদের মতামত কমেন্ট করুন এরকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্রিল্যান্সিং এক্সপ্রেস ইন্সটিটিউটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url