জন্মাষ্টমী ২০২৫: শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন, গুরুত্ব, উপবাস ও উদযাপনের ইতিহাস
জন্মাষ্টমী ২০২৫ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এদিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি পালিত হয় ভক্তি ও আনন্দের সাথে। মথুরা, বৃন্দাবন থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ও ভারতের নানা মন্দিরে চলে শোভাযাত্রা, কীর্তন, উপবাস ও পূজা-পার্বণ। নিচে আমরা জন্মাষ্টমীর ইতিহাস, গুরুত্ব ও পূজার নিয়ম বিস্তারিত জানবো।
জন্মাষ্টমীর দিনে উপবাস, ভজন, কীর্তন ও ধর্মীয় আলোচনা ভক্তদের মধ্যে আধ্যাত্মিক শান্তি নিয়ে আসে। ২০২৫ সালে জন্মাষ্টমী পালনের তারিখ, শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা, পূজা-পার্বণের ধাপ এবং সামাজিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ভূমিকা
হিন্দু ধর্মে পরমেশ্বর বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হিসেবে মানা হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে। তাঁর জন্মতিথি "জন্মাষ্টমী" নামেই পরিচিত, যা ভক্তদের জন্য এক পবিত্র দিন। ২০২৫ সালে ১৫ আগস্ট, শুক্রবার জন্মোৎসব পালিত হয়েছে। এ দিনটি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয় বরং ধর্ম, ন্যায়, প্রেম ও ভক্তির মহৎ শিক্ষার স্মারক।
জন্মাষ্টমীর ইতিহাস
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে প্রতি বছর এ উৎসব পালিত হয়। উত্তর ভারতের বৃন্দাবন ও মথুরায় কৃষ্ণভক্তরা শ্রীকৃষ্ণ পূজা পালন শুরু করেন খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই। তখন এটি মূলত গোকুল ও বৃন্দাবনের গ্রামীণ সমাজে গান, নৃত্য ও রাসলীলা আকারে পালিত হতো।
পরবর্তীতে ভক্তি আন্দোলনের সময় (১৪শ–১৭শ শতক) শ্রীকৃষ্ণ পূজা জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায় এবং বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও নেপাল, ফিজি, মরিশাস, আমেরিকা ও ইউরোপেও হিন্দু সম্প্রদায় জন্মাষ্টমী উদযাপন করে।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা
হিন্দু ধর্মে চারটি যুগ রয়েছে, এই চারটি যুগের মধ্যে তৃতীয় যুগ দ্বাপর যুগ। ধর্মীয় কাহিনি অনুসারে, দ্বাপর যুগে মথুরার রাজা ছিলেন কংস যিনি ছিলেন এক নিষ্ঠুর শাসক এবং এই কংসের বোন ছিল দেবকী। দেবকীর বিয়ে হয়েছিল বসুদেবের সঙ্গে। ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছিল, দেবকী ও বসুদেবের অষ্টম সন্তান কংসকে বিনাশ করবে। তাই কংস তাঁর বোন দেবকী এবং ভগ্নীপতি বসুদেবকে কারাগারে বন্দি করে রাখেন এবং সন্তানদের একে একে হত্যা করতে থাকেন।
দেবকীর গর্ভে যখন অষ্টম সন্তান ছিলেন তখন চারপাশে ছিল কঠোর পাহারা। মধ্যরাতে, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে, মথুরার কারাগারে শ্রীকৃষ্ণ জন্ম নেন। অলৌকিকভাবে কারাগারের শিকল খুলে যায়, প্রহরীরা অচেতন হয়ে পড়ে, আর যমুনা নদী শান্তভাবে পথ করে দেয়। নবজাতক কৃষ্ণকে গোকুলে নিয়ে গিয়ে বসুদেব নন্দ ও যশোদার ঘরে রেখে আসেন। সেখানে কৃষ্ণ বেড়ে ওঠেন সাধারণ গোপালক হিসেবে এবং পরে কংসকে পরাজিত করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। এই জন্মকাহিনির স্মৃতিই শ্রীকৃষ্ণ পূজা উদযাপনের মূল ভিত্তি।
ধর্মীয় গ্রন্থে জন্মাষ্টমীর উল্লেখ
বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে জন্মাষ্টমীর উল্লেখ রয়েছে, যেমন: শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ, মহাভারতে, বিষ্ণু পুরাণ, হরিবংশ পুরাণ ইত্যাদি। শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণে কৃষ্ণকে পরমেশ্বরের অবতার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি অধর্ম নাশ করে ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথিবীতে আগমন করেন। এই পুরাণেই শ্রীকৃষ্ণের জন্ম কাহিনী সবথেকে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, দেবকীর গর্ভে কৃষ্ণ জন্ম নিলে মথুরার কারাগার অলৌকিক আলোয় উদ্ভাসিত হয়।
বসুদেব যখন কৃষ্ণকে গোকুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন যমুনার জল সরে গিয়ে নিরাপদ পথ তৈরি করে। যদিও কুরুক্ষেত্র যুদ্ধকেন্দ্রিক মহাকাব্য মূলত মহাভারত তবুও এখানে কৃষ্ণের অবতারত্বের তাৎপর্য স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। মহাভারতে কৃষ্ণ শুধু একটি চরিত্র নন, বরং তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বররূপে প্রতিভাত। জন্মাষ্টমী সেই অবতারের আগমনদিনের স্মারক। এছাড়াও শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা, শৈশবলীলা, দানব বধ এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার কার্যকলাপ বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ আছে বিষ্ণু পুরাণে।
জন্মাষ্টমীর গুরুত্ব
হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব হিসেবে পালিত হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব, যাকে কৃষ্ণজন্মাষ্টমী বলে। জন্মাষ্টমীর মূল গুরুত্ব ধর্ম প্রতিষ্ঠার স্মারক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামের শিক্ষা এবং ভক্তি ও প্রেমের অনুশীলন।
আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
জন্মাষ্টমীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে সেগুলো হলো : আত্মশুদ্ধি ও উপবাস, ধ্যান ও ভগবদ্গীতা পাঠ, অহংকারের বিনাশ, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও মিলন ইত্যাদি। আত্মসংযমের এক বিশেষ সাধনা হিসেবে দেখা হয় জন্মাষ্টমীতে উপবাসকে, যা আধ্যাত্মিক সাধনায় মনোযোগ বাড়ায় এবং শরীর ও মনকে শুদ্ধ করে। ভগবদ্গীতা পাঠ করলে কৃষ্ণ প্রদত্ত জীবনের দার্শনিক ব্যাখ্যা যেমন কর্মযোগ, ভক্তিযোগ ও জ্ঞানযোগ ভক্তদের আধ্যাত্মিক উন্নতিতে দিশা দেয়, তাই অনেক ভক্ত এ দিনে ভগবদ্গীতা পাঠ করেন।
প্রতীকীভাবে মানুষের অজ্ঞতা ও অহংকারের অন্ধকারকে নির্দেশ করে শ্রীকৃষ্ণের কারাগারের অন্ধকারে জন্ম নেওয়া। ভক্তদের মনে জ্ঞান, আলো ও মুক্তির বার্তা জাগ্রত করে তাঁর জন্ম। ভজন, কীর্তন ও সেবামূলক কার্যক্রমে ভক্তরা একত্রিত হয়ে অংশ নেন, যা আধ্যাত্মিক ঐক্যকে দৃঢ় করে। তাই জন্মাষ্টমীকে সামাজিক মিলনের প্রতীক বলা যায়। অন্যায়, হিংসা ও ভোগবাদী জীবনের মাঝে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম আমাদের মনে করিয়ে দেয়— সত্যের পথে চলা ভক্তিকে জীবনের কেন্দ্রে রাখা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে দাঁড়ানো।
সামাজিক প্রভাব
ঐক্য, ন্যায়পরায়ণতা, ভক্তি এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জন্মাষ্টমী শুধু আধ্যাত্মিক নয়, বরং সম্প্রীতি ও সামাজিক ঐক্যের অন্যতম উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জন্মাষ্টমীর সামাজিক প্রভাবগুলো হলো: সামাজিক মিলনমেলা, ধর্মীয় সম্প্রীতি, দান ও সেবার মনোভাব, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, শিক্ষামূলক প্রভাব, সামাজিক শৃঙ্খলা ও অনুপ্রেরণা ইত্যাদির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জাতি, শ্রেণি বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে মন্দিরে, শোভাযাত্রায় ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ভক্তরা একত্রিত হন এই দিনে, যা সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়ায়। এই দিনে ভক্তরা শুধু পূজায় সীমাবদ্ধ থাকেন না; বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ উৎসবে অংশ নেন অর্থাৎ কৃষ্ণজন্মাষ্টমী ভিন্ন বিশ্বাসের মানুষের মধ্যে বোঝাপড়া ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলে।
ভক্তরা দান-ধ্যান, সেবা কার্যক্রম ও দরিদ্রদের সহায়তায় বিশেষ উদ্যোগ নেন পাশাপাশি মন্দির ও সংগঠনগুলো চিকিৎসা শিবির, খাদ্য বিতরণ, এবং জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি আয়োজন করে। নীতি, ইতিহাস ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ শিখে শিশু ও তরুণরা এই উৎসবে অংশ নিয়ে। গান, নাচ, কীর্তন, নাটক (রাসলীলা), ভজন এবং শোভাযাত্রার মাধ্যমে এক বৃহৎ সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয় জন্মাষ্টমী যেগুলো মানুষকে বিনোদন দেয়ার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা দেয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখে। মূলত কৃষ্ণের জন্মকাহিনি ভক্তদের শেখায়—অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে এবং সত্যের পথে চলতে হবে।
জন্মাষ্টমীর উপবাস ও পূজা-পার্বণ
উপবাস এবং পূজা-পার্বণের নানা আচার জন্মাষ্টমীর মূল আকর্ষণ, যা ভক্তরা আন্তরিকতা ও ভক্তিভরে পালন করেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে উপবাস করলে ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক দৃঢ় হয় এবং আত্মাকে শুদ্ধ করে।
উপবাসের নিয়ম
কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি আছে উপবাস পালনের যা ভক্তরা আন্তরিকভাবে অনুসরণ করেন। উপবাসের ধরনগুলো হলো: নির্জলা উপবাস, আনুষ্ঠানিক উপবাস, সাত্ত্বিক উপবাস। নির্জলা উপবাসে ভক্তরা সারাদিন জল ও খাদ্য কিছুই গ্রহণ করেন না শুধুমাত্র গভীর রাতের পূজা শেষে বা পরের দিন পারণ করে উপবাস ভঙ্গ করে। আনুষ্ঠানিক উপবাসে ভক্তরা দুধ, মধু, ফল, বাদাম, দই ইত্যাদি গ্রহণ করেন, তবে শস্য, লবণ ও রান্না করা খাবার এড়ানো হয়। আবার সাত্ত্বিক উপবাসে কেবল নিরামিষ ও সাত্ত্বিক খাবার যেমন ফল, পঞ্চগব্য, প্রসাদ ইত্যাদি খান।
উপবাসের বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে সেগুলো হলোঃ সকালের প্রস্তুতি, দিনভর আচরণ, মধ্যরাত্রির পূজা, উপবাস ভঙ্গ (পারণ)। ভোরে স্নান করে শুচি-পরিচ্ছন্ন অবস্থায় কৃষ্ণের নাম স্মরণ করতে হয়। গৃহ বা মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণের প্রতিমা বা ছবি শুদ্ধ জলে স্নান করানো হয় এবং দিনভর ভজন-সঙ্গীত, কীর্তন ও গীতা পাঠে মগ্ন থাকেন ভক্তরা। কৃষ্ণের জন্মক্ষণে বিশেষ পূজা ও আরতি করা হয় এবং মধু, দুধ, মাখন, দই ও তুলসীপাতা দিয়ে কৃষ্ণকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। জন্মাষ্টমীর পরদিন সকালে উপবাস ভঙ্গ করা হয় প্রথমে গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ বা প্রার্থনা করে তারপর ফল, প্রসাদ বা জল গ্রহণ করা হয়।
পূজা-পার্বণের ধাপ
জন্মাষ্টমীর দিনে পূজা-পার্বণ নির্দিষ্ট কিছু ধাপে সম্পন্ন হয় সেগুলো হলো: প্রস্তুতি ধাপ, সংকল্প ধাপ, আচার ধাপ, মধ্যরাত্রির পূজা ধাপ, প্রসাদ ধাপ, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক ধাপ, উপবাস ভঙ্গ ধাপ (পারণ)। ভোরে স্নান করে শুচি-পরিচ্ছন্ন অবস্থায় পূজার জন্য প্রস্তুত হতে হয় কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে উপবাস ও পূজা করার সংকল্প নেন ভক্তরা পূজার আগে।
দই, দুধ, মধু, ঘি দিয়ে কৃষ্ণকে স্নান করানো হয় (অভিষেক) কৃষ্ণকে নতুন বস্ত্র, অলংকার, ফুল ও অর্ঘ্য নিবেদন করা হয় এবং কৃষ্ণের জন্ম সময় ছিল গভীর রাত, তাই রাত বারোটায় বিশেষ পূজা হয়। ভোগ শেষে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয় এবং অনেক স্থানে মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের হয়, পরদিন উপবাস ভঙ্গ করা হয়।
ভারত ও বাংলাদেশে জন্মাষ্টমীর উদযাপন
এক মহা উৎসব হিসেবে জন্মাষ্টমী পালিত হয় ভারতে। মথুরা ও বৃন্দাবন (উত্তর ভারত) ভগবান কৃষ্ণের জন্মদিন প্রধান কেন্দ্র যেখানে শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে মন্দিরে ভক্তরা ভীড় করেন। মহারাষ্ট্রে “দই হাণ্ডি” বিশেষ জনপ্রিয়। কৃষ্ণের শৈশবের দুষ্টুমির প্রতীক হিসেবে ভক্তরা দলে দলে মানব-পিরামিড গড়ে দই, মাখন ভরা মাটির হাঁড়ি ভাঙেন। বাংলাদেশে কৃষ্ণজন্মাষ্টমী ভক্তির সঙ্গে পালন করা হয় বিশেষ পূজা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে। চট্টগ্রাম ও সিলেটে দিনব্যাপী পূজা, কীর্তন ও ধর্মীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় বড় বড় মন্দির ও আশ্রমে।
মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠান
জন্মাষ্টমীর আগের দিন থেকেই মন্দিরগুলো পরিষ্কার এবং রঙিন আলো, ফুলের মালা, আল্পনা ও ধূপ-প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয় মন্দির। শ্রীকৃষ্ণের প্রতিমা বা ছবিকে শিশুরূপে সাজানো হয়, যাতে ভক্তরা কৃষ্ণের জন্মমুহূর্ত অনুভব করতে পারেন।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ও ভাগবত পুরাণ থেকে পাঠ করা হয় এবং পূজার সময় মন্ত্রোচ্চারণ, ঘণ্টা ও শঙ্খধ্বনিতে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়। ভগবান কৃষ্ণের জন্মদিন আসল আকর্ষণ হলো রাত বারোটার পূজা এছাড়াও দিনব্যাপী বা সারারাত ভজন ও কীর্তনের আয়োজন থাকে। প্রসাদ হিসেবে মিষ্টি, ফল, মাখন ও পায়েশ বেশি জনপ্রিয় যা পূজা শেষে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
গ্রামীণ ও নগর জীবনে উৎসব
অনেকটাই সরল ও আন্তরিক পরিবেশে পালিত হয় গ্রামের উৎসব বিশেষ করে ছোট মন্দির বা আশ্রম কেন্দ্রীকভাবে পূজা হয়। পূজা, কীর্তন ও প্রসাদ বিতরণে অংশ নেন গ্রামের সকল মানুষ। রাসলীলা, নাটক বা ভক্তিগান পরিবেশিত হয় অনেক সময় গ্রামের মাঠে। নগর জীবনে ভগবান কৃষ্ণের জন্মদিন উদযাপনে বৃহৎ আয়োজন করা হয়। শহরের বড় বড় মন্দিরে (যেমন ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির বা মথুরার কৃষ্ণ মন্দির) বিশেষ অনুষ্ঠান হয় এবং পাশাপাশি আলোসজ্জা, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় জমকালো আকারে। নগরে ভক্তদের পাশাপাশি অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও দর্শক হিসেবে অংশ নেন। এতে উৎসবটি বহুসাংস্কৃতিক রূপ পায়।
উপসংহার
শ্রীকৃষ্ণের জীবন ও উপদেশ মানবজাতির জন্য এক চিরন্তন দিশারি। তাই এ দিন ভক্তরা শুধু পূজা নয়, বরং আত্মশুদ্ধি ও সৎকর্মের অঙ্গীকার করেন।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জন্মাষ্টমী, শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা, উপবাস এবং পূজা-পার্বণের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আরও ধর্মীয় উৎসব এবং আধ্যাত্মিক তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমাদের ওয়েবসাইট বা আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামত বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করুন
ফ্রিল্যান্সিং এক্সপ্রেস ইন্সটিটিউটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url