২০২৫ সালে স্মার্টফোন কেনার আগে জেনে নিন এই ৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

আপনি কি জানতে চান ২০২৫ সালে স্মার্টফোন কেনার আগে আপনাকে কি কি বিষয় ধারনা রাখতে হবে? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে ফোন কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই স্মার্টফোন কেনার আগে কোন বিষয়গুলো জেনে রাথা প্রয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
স্মার্টফোন কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়সমূহ ২০২৫
নিচে আপনাদের জন্য ২০২৫ স্মার্টফোন কেনার টিপস সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই ফোন কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়সমূহ জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে মোবাইল কেনার গাইড ২০২৫ সম্পর্কে জেনে নিন।

ভূমিকা

বর্তমানে বাজারে নানা দামের ও ব্র্যান্ডের অসংখ্য স্মার্টফোন পাওয়া যায়। তবে ২০২৫ সালের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলে স্মার্টফোন কেনার আগে কিছু বিষয় জানা অপরিহার্য। চলুন দেখে নেই কী কী জিনিস খেয়াল রাখা উচিত।

স্মার্টফোন কেনার আগে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ

প্রথমেই ভাবতে হবে আপনি ফোনটি কোন কোন কাজে ব্যবহার করার জন্য ক্রয় করবেন। আগে লক্ষ্য নিশ্চিত করতে হবে। তারপর ফোন কিনতে হবে। আপনার ব্যবহারের লক্ষ্য সাধারণ কল কাওকে মেসেজ করা বা ফেসবুক। ভিডিও করা বা ছবি তোলা। ফোন দিয়ে ইন্টারনেট এর ভারী কোনো কাজ করা নাকি অফিস বা অনলাইন ক্লাস আপনি কোনটা করবেন সেটা আগে বাছাই করতে হবে।

তারপর ফোনটার ব্যাটারির ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হবে। ব্যাটারির ক্ষমতা যদি 5000MAH হয় বা তার বেশি হয় তাহলে ভালো। চার্জ হয় কত সময়ে সেই বিষয় টা খেয়াল করতে হবে।সব সময় চেষ্টা করতে হবে 1 ঘন্টার কম সময়ে যেনো ফোন দিতে ফুল চার্জ হয়ে যাবে সে রকম স্মার্ট ফোন সিলেক্ট করতে হবে। 5G নেটওয়ার্ক থাকলে সবথেকে ভালো হবে কারণ ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। শক্তিশালী wi-fi বা bluetooth সাপোর্ট করবে কি না সেটা দেখতে হবে। তবে ভবিষ্যতের কথা ভাবলে 5G নেটওয়ার্ক অনেক জরুরি।

প্রসেসর ও RAM এর ক্ষমতা

বর্তমানে, স্মার্টফোন জগতে Snapdragon 8 Gen 3 এবং Dimensity 9300 প্রসেসরগুলিকে শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বিশেষ করে ভারী অ্যাপ্লিকেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে। ভিডিও এডিটিং, উচ্চ-গ্রাফিক্স গেম খেলা, অথবা যেকোনো উচ্চ-মানের অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য একটি শক্তিশালী প্রসেসর এবং পর্যাপ্ত RAM প্রয়োজন। বর্তমানে বাজারে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং শীর্ষ-যুক্ত প্রসেসরগুলির মধ্যে একটি হল Qualcomm Snapdragon 8 Gen 3এবং Media Tek Dimensity 9300।

উচ্চ গেমিং পারফরম্যান্স,ব্যাটারি দক্ষতা এবং AI প্রসেসিং এর জন্য এগুলো প্রদান করা হয়।মাল্টিটাস্কিং ও ল্যাগ-ফ্রি অভিজ্ঞতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য 8GB থেকে 12GB RAM কমপক্ষে এরকম থাকা অনেক জরুরি। কম্পিউটার এর কর্মক্ষমতা নির্ধারণ করে কম্পিউটার প্রসেসর এবং আরএএম।কম্পিউটার এর মস্তিষ্ক হলো প্রসেসর। অস্থায়ী ডেটা সংরক্ষণ এর স্থান হলো র‍্যাম। কম্পিউটার এর প্রধান অংশ প্রসেসর যা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU) নামেও পরিচিত।প্রসেসর প্রতি সেকেন্ডে কত গুলো কাজ করতে পারে তার পরিমাপ কে বলা হয় ক্লক স্পিড।

একটা প্রসেসর প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ান কাজ করে থাকে। প্রসেসরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ক্যাশ মেমোরি। যা প্রত্যেক প্রসেসর এর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। কম্পিউটারটি কতটুকু ডেটা মনে রাখতে পারবে তা নির্ভর করে র‍্যামের ক্ষমতার উপর। র‍্যামএর ক্ষমতা 4gb, 8gb, 16gb হয়ে থাকে।অতএব,আমরা বলতে পারি প্রসেসর ডেটা প্রসেস করার জন্য এবং র‍্যাম ডেটা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই ২ টা উপাদান কম্পিউটার ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা প্রবাহিত করে থাকে।

ক্যামেরা পারফরম্যান্স

ক্যামেরার মেগাপিক্সেল নয়, বরং সেন্সর সাইজ ও সফটওয়্যার প্রসেসিং দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।ব্যাটারি লাইফ কমপক্ষে 4500-5000MAH থাকা উচিত বলে মনে করা হয়। ফাস্ট চার্জিং হিসাবে 45W বা তার বেশি সাপোর্ট থাকা ভালো অপশন। LTPO ডিসপ্লে এবং এআই-ভিত্তিক পাওয়ার ম্যানেজম্যান্ট ফিচার খেয়াল করতে হবে যদি লম্বা ব্যাটারি ব্যাকআপ করার ইচ্ছে থাকে। ব্যাটারি কম খরচ এবং কালার বেশি উজ্জ্বল করার জন্য AMOLED বা OLED ডিসপ্লে কে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।

স্মুথ স্ক্রলিং ও গেমিংয়ের জন্য কমপক্ষে 120 Hz রিফ্রেশ রেট থাকা উচিত বা জরুরি। ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করার জন্য HDR10+সাপোর্ট রাখতে হবে। একটা ক্যামেরার ছবি তোলা ও ভিডিও করার ক্ষমতা কে ক্যামেরা পারফরম্যান্স বলে। ক্যামেরার পারফরম্যান্স ক্যামেরার সেন্সর, লেন্স, প্রসেসিং সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। ছবি তোলার ক্ষেত্রে লেন্স গভীরতা নির্ধারণ করে। ছবির মান উন্নত করার জন্য ক্যামেরা প্রসেসিং সফটওয়্যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে ইন্টারফেস এবং সেটিং ইত্যাদি অপশন ভালো হয়ে থাকে।একেক রকম ক্যামেরা একেক রকম বিষয়ে ফোকাস করে। ইমেজ প্রসেসিং সফটওয়্যার এর জন্য পরিচিত হলো ক্যামেরা।উদাহরণ হিসাবে গুগল পিক্সেল এর কথা উল্লেখ্য করা যায়।

ব্র্যান্ড, বাজেট ও ওয়ারেন্টি বিবেচনা করুন

বাজারে অনেক ব্রান্ডের ফোন রয়েছে তার মাজে জনপ্রিয় ফোন হলো Samsung, Xiaomi, Realme, iPhone। এখানে দামের পার্থক্য আছে। যেমন ব্রান্ডের ফোন কিনবেন তেমন দাম নিবে। ভালো কোয়ালিটির ফোন নিলে ভালো পারফরম্যান্স হবে। ফোন কেনার সব টুকু নির্ভর করবে ফোনটি দিয়ে কেমন কাজ করা হবে তার উপর ফোনটি দিয়ে কোন ধরনের কাজ করা হবে তার উপর। আপনি কেমন ব্যবহারকারী গেমার,কন্টেন্ট ক্রিয়েটক এবং নরমাল ইউজার এগুলোর মাঝে কোনটা আপনি আগে সেটা বাছাই করতে হবে।

ক্যামেরা কেমন, ব্যাটারি কেমন এবং বাজেট কেমন সব কিছু বিবেচনায় আনতে হবে। সবশেষে যেটি আপনার বাজেট, পছন্দ এবং কার্যকারি মনে হবে সেটি কেনার জন্য বেছে নিতে হবে। এই নিয়মানুযায়ী পছন্দ করলে সঠিক স্মার্ট ফোনটি পাওয়া যাবে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো স্মার্ট ফোন। এটা শুধু ফোন বা এসএমএস করার জন্য ব্যবহার করা হয় এমন কিছু নয় এটা বর্তমান সময়ে আমাদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ হিসাবে পরিচিত।

মানুষ এখন সামাজিক যোগাযোগের উপর বেশি নির্ভরশীল। এজন্য কোনো স্মার্ট ফোন ক্রয় করার আগে অবশ্যই ফোনটি যাচাই করে নেওয়া উত্তম ব্যক্তির কাজ। সকল শ্রেণির লোকের স্মার্ট ফোন কেনার আগে অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের জিনিস কিনতে হবে কারণ ব্র্যান্ডের জিনিসের দাম বেশি হলেও আবার সেটা বিক্রির সময় ভালো দামে বিক্রি করা যায়। এজন্য সকলের উচিত ভালো ব্র্যান্ডের ফোন ব্যবহার করা।

পরামর্শ

স্মার্টফোন কেনা একটি বিনিয়োগ।  তাই প্রযুক্তির ভাষা ও ভবিষ্যৎ প্রয়োজন বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।বাজারে প্রতি বছর নতুন নতুন স্মার্ট ফোন আসে। ২০২৫ সালে ও অনেক এসেছে। স্মার্ট ফোন বর্তমান সময়ে শুধু কল করার জন্য ব্যবহার করা হয় না ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে জীবন পরিচালনা করার জন্য ও অনেকাংশে জরুরি। এজন্য এখনের সময়ে স্মার্ট ফোন কেনার আগে অনেক বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।যাতে ফোন টি অনেক দিন ব্যবহার করা যায় এবং নিজের ইচ্ছার সাথে মানানসই হয়।

উপসংহার

ফোনটি ক্রয় করার আগে অবশ্যই RAM পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে কি না জানতে হবে। বর্তমান সময়ে যে সকল ভারী কাজ রয়েছে এগুলো বহন করার মতো শক্তিশালী আছে কি না সেটা জানা জরুরি। সকল প্রসেসর এর খোঁজ করতে হবে।6-8 gb এরকম র‌্যাম হলে ভালো। যারা অনেক বেশি শক্তিশালী অর্থাৎ হাই এন্ড ব্যবহারকারী তাদের জন্য 12 জিবি বা তার থেকে বেশি রাখা ভালো। বর্তমান সময়ে সকল ফোন দ্রুত চার্জ হওয়া টা অনেক বেশি জরুরি। ব্যাটারিতে ওয়ারলেস চার্জিং থাকলে অনেক বেশি সুবিধা হয়।ফোনের নিরাপত্তা ও পারফরম্যান্স এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হলো সফটওয়্যার আপডেট করা। এই বিষয় টিকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পেরেছেন ২০২৫ সালে স্মার্টফোন কেনার আগে কী কী বিষয়ে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এ ধরনের আরও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্রিল্যান্সিং এক্সপ্রেস ইন্সটিটিউটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url